মতুয়া বিবাহ রীতিতে কতিপয় বিষয় একান্তভাবে স্মরণ রাখা আবশ্যক


🎎 🎎 🎎 🎎 🎎 🎎 🎎 🎎 🎎
১. বিবাহ বা কোন মাংগলিক কাজে বিধবা ও মৃতবৎসা নারীকে মংগলঘটের জল আনতে অনুপযুক্ত ঘোষণা- মতুয়া নীতিমালার পরিপন্থি ও অমানবিক।
২. "কন্যাদান" শব্দটি মতুয়া বিবাহ পদ্ধতিতে ব্যবহার নিষিদ্ধ। মতুয়া নীতিতে কন্যা দানযোগ্য সামগ্রী নয়।
৩. বিয়ের আসরে আনার পূর্বেই কন্যাকে শাঁখা পড়ানো অনুচিত। বিবাহ বাসরে বরের হাতে সিঁদুর পড়ানোর সম রীতিতে একই সময়ে শাঁখাও বরের হাতে আসরে পড়ানোই রীতি হওয়া আবশ্যক।
৪. অগ্নি যজ্ঞ মতুয়া বিবাহ পদ্ধতিতে বর্জনীয়।
৫. কেবলমাত্র কন্যা কর্তৃক এককভাবে বরের পদপূজার বিকল্প রীতি হিসেবে বর কন্যার উভয় উভয়কে জোড়হস্তে নমস্কার পদ্ধতি গ্রহণীয়। এ বিষয়ে স্বরূপেন্দু সরকার এর সমাজ সংস্কারে মতুয়া পুস্তিকার ৪৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখিত " প্রথমে কন্যা একটি আচারমালা বরের গলায় পরিয়ে দিয়ে জোড় হাতে নমস্কার করবে। বরও অনুরূপ একটি আচারমালা কন্যার গলায় পরিয়ে দিয়ে নমস্কার করবে।"- অনুসরণ করা যেতে পারে। বিবাহপর্বেই সংসারে নারী পুরুষের সম অধিকার ও পরষ্পরে সম শ্রদ্ধাবোধ রাখা মতুয়া নীতি বলে উভয়কে বুঝিয়ে দেয়া দরকারে এ নীতি অতি আবশ্যক।
৬. মতুয়া বিবাহ পদ্ধতিতে বিবাহের দিনে বর কনেকে উপবাস করানো স্বীকৃত নয়। তবে গুরুপাক খাবার এ দিন তাদের জন্য বর্জন ভাল।
৭. কোন অবস্থাতেই বিবাহ বাসরে শুধু বরের মুখমণ্ডল কাপড়ে মুড়িয়ে ঢাকা যাবেনা।
৮. শ্রীধাম ওড়াকান্দী'র হরি মন্দির মান্যতা ও গুরু মান্যতা হিসেবে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ ও দানসামগ্রী মতুয়া বিবাহ বাসরে প্রদান রীতি প্রচলিত হতে পারে।
৯. 'শ্রীশ্রীহরিলীলামৃত' মহাগ্রন্থটি মতুয়া বিবাহ বাসরে বর কনেকে প্রদান অবশ্যই করা কর্তব্য।
১০. বিবাহে বর কনের শপথ পাঠের পূর্বভাগে 'দ্বাদশ আজ্ঞা' পাঠ করাতে হবে।
১১. বিবাহ বাসরে বর কনেকে শ্রীধাম ওড়াকান্দীর কামনা সাগরের জল ও মঙ্গলঘটের জল পান করাতে হবে। উল্লেখ্য, মংগলঘটের জলে কামনা সাগরের সংগ্রহিত জল মিশিয়ে ঘট স্থাপন করে সে জলই পান করালে একবার জল পানই যথেষ্ট। এ রীতি ঘৃণ্য ব্রাহ্মণ্যবাদী "পঞ্চগব্য" ( গোময়, গোরোচনা, দধি, দুগ্ধ, ঘৃত) খাওয়ানোর বিকল্প যৌক্তিক পদ্ধতি বলে বিবেচিত হতে পারে।
১২. বর কনে নির্বাচনে মতুয়ারা বর্ণ, গোত্রের কোনরকম বিভাজনকে প্রাধান্য দিবেনা। মতুয়া পরিচয়ধারী হলে উভয় পরিবারের সম্মতিতে বিবাহ নিষ্পন্ন হবে।
১৩. গুরুচাঁদের নীতি অনুসারে মতুয়া সমাজে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে বিধবা বিবাহ স্বীকৃত।
১৪. মতুয়া বিবাহবাসরে যিনি পৌরহিত্যকারীর দায়িত্ব পালন করবেন, তিনি নিজে অবিবাহিত হতে পারবেন না। যিনি নিজে বিবাহ করেননি কিংবা গার্হস্থ ধর্মের প্রধান একটি কাজ বিবাহ করতে নিজে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন, তিনি অপর কারো বিবাহ বাসরে পৌরহিত্যকারী মনোনীত হলে প্রশ্ন কিছু এসেই যাবে।
অমিতাভ মল্লিক অমি
লালবাগ, ঢাকা
১৭/১২/২০২২ইং
From Facebook

Comments

Popular posts from this blog

Harichand